বিয়ের পর দুজনার হাতে হাত রেখে কাটে জীবনের একটি বড় অংশ। বিয়ে করার আগে আমরা অনেক কিছুই চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেই। যার সাথে বিয়ে হচ্ছে সে মানুষ হিসেবে কেমন, ব্যক্তিত্ব কেমন, সারাজীবন একসাথে কাটানোর মত কিনা ইত্যাদি অনেক কিছুই আমরা দেখি। তবে এসব বিষয় দেখতে গিয়ে অনেক সময়েই আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার ভুলে যাই। আর তা হচ্ছে মেডিকেল টেস্ট ।
বিয়ের আগে মেডিকেল টেস্ট কেন জরুরী?
যে মানুষটির সঙ্গে সারাজীবন কাটাবন তার মনের পাশাপাশি শারীরিক বিষয়গুলোও জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিয়ের আগে অবশ্যই কিছু মেডিকেল টেস্ট করানো উচিত। থ্যালাসেমিয়া, বর্ণান্ধতা, সিকল সেল অ্যানিমিয়া, এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফেটালিসের মতো রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিয়ের আগে ছেলে ও মেয়ের মেডিকেল টেস্ট খুবই জরুরি। এই রোগগুলো এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়। তাই বিয়ের আগে মেডিকেল টেস্ট করালে ভবিষ্যত জীবন এবং পরের প্রজন্ম থাকবে আশঙ্কা মুক্ত।
বিয়ের আগে কি কি মেডিকেল টেস্ট করা উচিত?
বিয়ের পর সারাজীবন একে অপরের সাথে কাটাবার আগে শারীরিক ও মানসিক সবদিক সম্পর্কে পরিষ্কার হয়ে নেয়াই ভালো। কারণ বিয়ের পর কোনো সমস্যা সামনে এলে তা নিয়ে হতে পারে পারিবারিক অশান্তি, এমনকি তা গড়াতে পারে ডিভোর্স পর্যন্ত। সুতরাং দেখে নিন ৯টি মেডিকেল টেস্ট যা অবশ্যই বিয়ের আগে করাবেন।
১. রক্তের গ্রুপ নির্ণয়
বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর রক্তের গ্রুপ জানাও খুব জরুরি। ছেলে ও মেয়ে উভয়ের রক্তের গ্রুপ পজিটিভ হওয়া ভালো। আর যদি ছেলের রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হয়, তাহলে মেয়ের রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হলে ভালো। কিন্তু নেগেটিভ গ্রুপ কোনো মেয়ের সঙ্গে পজেটিভ কোনো ছেলের বিয়ে হলে তাদের সন্তান জন্মদানের সময় কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে।
আদর্শ জীবনসঙ্গী খুঁজতে
এক্ষেত্রে প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা না হলেও দ্বিতীয় সন্তান থেকে সমস্যা শুরু হতে পারে। অনেকসময় গর্ভেই সন্তান মারা যায়। কিংবা জন্মের পর তার মারাত্মকরকম জন্ডিস হয়। মস্তিষ্কও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
২. সিবিসি মেডিকেল টেস্ট
মূলত পাত্র এবং পাত্রী থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না তা জানতে সিবিসি টেস্ট অর্থাৎ Complete Blood Count টেস্ট বেশ গুরুত্বপূর্ন। সিবিসি টেস্টে হিমোগ্লোবিন, এমসিভি, এমসিএইচসি যদি নরমাল থাকে তাহলে সমস্যা হবে না। কিন্তু টেস্টে যদি ছেলে-মেয়ের দুইজনই থ্যা্লাসেমিয়ার বাহক হয়ে থাকেন তবে বিয়ে না করাই ভালো। কারণ তাদের মধ্যে বিয়ে হলে তাঁদের এক-চতুর্থাংশ সন্তানও থ্যালাসেমিয়া সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে।
থ্যালাসেমিয়ায় রক্তে হিমোগ্লাবিনের পরিমান কমে যায়। ফলে রোগীকে প্রতি তিন থেকে আট সপ্তাহ পর পর রক্ত নিতে হতে পারে। আবার নিয়মিত রক্ত নেওয়ার কারণে বাড়তে পারে আয়রন যার ফলে হার্ট, লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ জন্য স্বামী স্ত্রী দুজনকেই বিয়ের আগে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিৎ। যদি বিয়ের আগে জানা না যায় যে, বর-কনে দুজনই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত তাহলে নিশ্চিতভাবেই তাদের নানা ধরণের সমস্যায় পড়তে হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৪ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মায়। আর বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়ার জিন বাহক মানুষের সংখ্যা প্রায় এক কোটি। থ্যালাসেমিয়া রোগের কোনো লক্ষণ বাহ্যিকভাবে দেখা না গেলেও শরীরের মাঝে থ্যালাসেমিয়ার জিন সুপ্ত অবস্থায় থাকে। আর ছেলে-মেয়ের দুইজনই থ্যা্লাসেমিয়ার বাহক হয়ে থাকলে বিয়ের পরে সন্তানের মাঝে এই রোগ প্রকাশ পায়।
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত কারোর সঙ্গে স্বাভাবিক কারোর বিয়ে হলে সন্তানের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হওয়ার ২৫ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে। হবু স্বামী-স্ত্রীয়ের মধ্যে একজন যদি থ্যালাসেমিয়ার বাহক হয়, তবে সমস্যা হয় না, কিন্তু দুজনেই এই রোগের বাহক হলে সেক্ষেত্রেও সন্তানের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ২৫ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে। আর দুজনেই যদি থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হয়, সন্তান না নেওয়াই ভালো।
৩. যৌনরোগ এবং এসটিডি
বিয়ের আগে HIV এবং অন্য কোনো সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিসেজ (STD), যেমন গনোরিয়া, সিফিলিস, ওয়ার্টস, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস আছে কিনা আপনার বা আপনার পার্টনারের এটা টেস্ট করা উচিত। HIV ছাড়া গনোরিয়া, সিফিলিস, ওয়ার্টস, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস যদি ঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো হয়, তবে সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু যদি একজনের HIV থাকে, তাহলে শারীরিক মিলনের মাধ্যমে আরেকজনের শরীরেও চলে যেতে পারে, এবং সন্তান হলে সেক্ষেত্রেও এই রোগ তার মধ্যে বাহিত হয়।
৪. ফার্টিলিটি টেস্ট
বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে পরবর্তী প্রজন্ম রেখে যাওয়া। কিন্তু যতই চিকিৎসা পদ্ধতি আধুনিক হোক না কেন, স্বীকার করতেই হবে বন্ধ্যাত্ব সমস্যা কিন্তু বেড়েই চলেছে। কিন্তু দম্পতির যে কোন একজন সন্তান জন্মদানে অক্ষম হলে সন্তান প্রসব কখনোই সম্ভব হবে না। আর আমাদের মতো দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখনও সন্তান আসতে কোনো সমস্যা হলে দোষ দেওয়া হয় মেয়েদেরই।তাই
তবে এ ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে স্বামী স্ত্রী দু’জনেরই বিয়ের আগে ফার্টিলিটি টেস্ট করে নেয়া উচিত। অনেক সময় বিয়ের পর সন্তান না হওয়ার পরবর্তীতে এই ফার্টিলিটি টেস্ট করতে গিয়ে দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী এর কোন একজন সন্তান জন্মদানে অক্ষম। এমন পরিস্থিতিতে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়া বেশ স্বাভাবিক। তাই বিয়ের আগেই এ ব্যাপারে পরিষ্কার হয়ে নেয়া উচিত।
আজকাল নারীদের মধ্যে পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যা খুব বেশি-ই দেখা যায়। এটি যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে, তত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু হবে, নয়তো বিয়ের পর গর্ভধারণে বেশ সমস্যা হয়। সেইসঙ্গে পাত্রের অকালে বীর্যপাতজনিত কোনো সমস্যা আছে কিনা তাও আগেই টেস্ট করে জেনে নেওয়া উচিত।
বিয়ের আগে দুজনই করান ফার্টিলিটি টেস্ট। পুরুষের ফার্টিলিটি চেক করার জন্য সিমেন টেস্ট আর মেয়েদের জন্য ওভিউলেশন টেস্ট করানো হয়।
জননতন্ত্রে কোনরকম জেনেটিক অ্যাবনর্মালিটি আছে কিনা তা দেখার জন্য পেলভিক আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করানো দরকার। তাছাড়াও প্রোল্যাক্টিন, FSH, LH, টেস্টোস্টেরন, ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন ইত্যাদি হরমোনের পরীক্ষা করতে ভুলবেন না।
৫. হেপাটাইটিস
বিয়ের আগেই মেডিকেল টেস্টের মাধ্যমে জেনে নিবেন ছেলে ও মেয়ের লিভার কেন্দ্রীক কোনো সমস্যা আছে কি না। এর সাথে হেপাটাইটিস-এ, হেপাটাইটিস-বি ও হেপাটাইটিস-সি আছে কিনা এ বিষয়টি বিয়ের আগেই জেনে নিতে হবে। কারণ হেপাটাইটিস সেরে গেলেও মেয়ে যদি বি বা সি-এ আক্রান্ত হয় তাহলে তার থেকে সংক্রমিত হয়ে স্বামী ও সন্তানের শরীরে যেতে পারে। এ জন্য বিয়ের আগেই হেপাটাইটিস এ ও বি ভ্যাকসিন নিয়ে নেওয়া উচিৎ। প্রাথমিক পর্যায়ে এসব সচেতনতা আমাদের কারো ক্ষেত্রে হয়তোবা সাময়িক মন খারাপের কারণ হতে পারে কিন্তু ভবিষৎ প্রজন্মেরর জন্য হলেও বিয়ের আগে মেডিকেল টেস্ট গুলো করা উচিত।
৬. জেনেটিক টেস্ট
পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্য জিনের মাধ্যমে সন্তানের মধ্যে প্রবাহিত হয়। এ কারণেই সন্তান সাধারনত দেখতে পিতা-মাতার মতই হয়ে থাকে। কিন্তু শুধু বাহ্যিক শারীরিক বৈশিষ্ট্যই নয়, আরো অনেক ধরনের বৈশিষ্ট্যই পিতা মাতা থেকে সন্তানের মধ্যে যেতে পারে। এবং এর মধ্যে জিনগত কারণে হওয়া অসুখও রয়েছে। তাই বিয়ের আগে জেনেটিক টেস্ট করা খুবই জরুরী। আপনার বা আপনার পার্টনারের যদি সিস্টিক ফাইব্রোসিস, ব্রেস্ট ক্যান্সার, লাং ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার থেকে থাকে, তাহলে সন্তানেরও তা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এমনকি আপনাদের পরিবারের কারুর এই রোগ থেকে থাকলেও তা সন্তানের হতে পারে। আর পারলে বিয়ের আগে দুই পরিবারেরই মেডিকেল হিস্ট্রি জেনে নিন।
৭. কিডনি মেডিকেল টেস্ট
ইউরিয়া পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে কিডনিতে কোনো সমস্যা আছে কি না। ইউরিয়া বেশি থাকলে পরবর্তীতে বাচ্চার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ছেলে ও মেয়ে উভয়কেই বিয়ের আগেই এর চিকিৎসা করে নিতে হবে।
৮. সিকল সেল অ্যানিমিয়া
থ্যালাসেমিয়ার মতোই আর একটি জিনবাহিত অসুখ সিকল সেল অ্যানিমিয়া। লোহিত রক্তকণিকার একধরণের ক্রনিক আর দুর্বল অবস্থা হল সিকল সেল ডিজিস। এই রোগে মানুষের রক্ত কণিকার গঠন ঠিকমতো হয় না। লোহিত রক্তকণিকার কোষগুলি কাস্তের মতো দেখতে হয়, আর সূক্ষ্ম রক্তবাহের মধ্যে দিয়ে কোষ এবং কলায় অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে না। আক্রান্ত ব্যক্তির অ্যানিমিয়া, শারীরিক দুর্বলতা, দেহের নানা অংশে যন্ত্রণা হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এই অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর রক্ত দিতে হয়। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বা প্রতি মাসে রক্ত দিয়ে রোগীকে সুস্থ রাখা হয়।
তাই ছেলে বা মেয়ের কারো যদি সিকল সেল জিন থেকে থাকে, তাহলে সতর্ক হওয়া ভাল। কারন, এক্ষেত্রে যদি একজন সিকল সেলের বাহক হন, তাহলে ৫০% সম্ভাবনা থাকে বাচ্চাটিরও সিকল সেলের রোগী হওয়ার। আগে থেকে রক্তপরীক্ষার মধ্যে দিয়ে এই রোগের আশঙ্কাকে নির্মূল করা সম্ভব।
৯. মানসিক রোগ পরীক্ষা
অনেক সময় মানসিক সমস্যাকে আমরা গুরুত্ব দিই না। সাধারণ মেডিকেল পরীক্ষায় সাইকোলজিক্যাল সমস্যা ধরা পড়ে না। কিন্তু সত্যি বলতে কী, কোনও ব্যক্তিকে বিয়ে করার আগে সে স্বাভাবিক কি না জানা খুব দরকার। অর্থাৎ, দেখা দরকার তার কোনও মানসিক সমস্যা আছে কি না। এটি খতিয়ে দেখার জন্য ছেলে-মেয়ের আচার ব্যবহার লক্ষ্য করতে হবে। পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব ও অফিসের লোকজনের থেকে খোঁজখবর নিতে হবে।
বিয়ের সময় পাত্র-পাত্রীর বাড়ির লোক তাঁদের ছেলেমেয়ে সম্পর্কে কোনও খারাপ কথা বলেন না। কিন্তু বিয়ের পরই ধরা পড়ে আসল রূপ। সুতরাং, পাত্র-পাত্রীর মানসিক সমস্যা আছে কি না সেটা দেখা খুব জরুরি। প্রয়োজনে সাইকোলজিস্টের সঙ্গে কথাও বলতে পারেন।
অবহেলা না করে এই মেডিকেল টেস্টগুলো করে বিয়ের পিঁড়িতে বসলে ভবিষ্যত জীবন নিঃসন্দেহে সুখী ও সমৃদ্ধ হবে। যদি কারো বড় ধরনের কোনো রোগ থাকে তাহলে আগে থেকে জেনে সতর্ক হওয়ার সুযোগ পাবে। এটা নিজেদের বা প্রজন্মকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। এই পরীক্ষাগুলোয় আপনাদের কারোই ফলাফল খারাপ না আসুক, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
কল করুনঃ+880-1407-004393 অথবা +88-01782-006615 এ।
আমাদের মেইল করুন taslima55bd@gmail.com
mexico drug stores pharmacies: Mexican Pharmacy Online – purple pharmacy mexico price list
indian pharmacy online https://indiaph24.store/# п»їlegitimate online pharmacies india
Online medicine order
mexico pharmacies prescription drugs: buying prescription drugs in mexico online – medicine in mexico pharmacies
india pharmacy mail order http://indiaph24.store/# buy medicines online in india
Online medicine home delivery