‘শুভ বিবাহ’। বিয়ে মানেই জীবনের নতুন অধ্যায়, নতুন একটি সম্পর্কের সূচনা। যে সম্পর্কের শুরুতেই ‘শুভ’ শব্দটি রাখতে হয়, সেই সম্পর্ক অবশ্যই শুরু করা উচিক যথেষ্ট শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতির সঙ্গে। ‘বিয়ে’ মানে অনেক ডিসিশন, অনেক স্যাক্রিফাইস, অনেক ভালোবাসা পাওয়া এবং সারাজীবন সবকিছুকে ধরে রাখার ক্ষমতা অর্জন করা। নিজের পরিচিত জীবন আর পরিচিত মানুষগুলোর কাছ থেকে ‘কিছুটা দূরে’ সরে যাওয়ার এই পর্বটির জন্য দরকার বিশেষ মানসিক প্রস্তুতির। লাভ ম্যারেজ হোক বা অ্যারেঞ্জড, বিয়ের পর সবাইকে বাস্তব জীবনের মুখোমুখি হতে হয়। আর সে কারণেই বিয়ের আগে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হচ্ছে বিয়ের জন্য মানসিক প্রস্তুতি প্রহণ।
বিয়ের জন্য মানসিক প্রস্তুতি কেন প্রয়োজন?
বেশীরভাগ সময়ই দেখা যায় ছেলে মেয়েদের বিয়ের জন্য কোন মানসিক প্রস্তুতি থাকে না। পরিবারের সিদ্ধান্তে অথবা নিজের পছন্দে হুট করেই বিয়ের পিঁড়িতে বসে যান। অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ বা পারিবারিকভাবে আয়োজিত বিয়েতে স্বাভাবিকভাবেই হয়তো ছেলে-মেয়ে পরস্পরকে জানার সময় বা সুযোগ পায় না। আবার প্রেমের বিয়ে ক্ষেত্রে অভিভাবকেরা মনে করেন, ছেলে-মেয়ে যেহেতু পূর্বপরিচিত, তাহলে নতুন করে প্রস্তুতির দরকার কী?
বিয়ের পরবর্তী জীবনটা হয় সাজানো-গোছানো, এখানে ছোট ছোট স্বপ্ন, ছোট ছোট আবদার পূরণ হয়। সে ক্ষেত্রে বর-কনে একে অন্য যতই চেনাজানা হোক না কেন, বিয়ের পর বাস্তব জীবনের মুখোমুখি হতে হয়। তখন স্বপ্ন ভেঙে যায় কারও কারও। রঙ্গিন জীবনের সীমানা পেরিয়ে বাস্তব জীবনে প্রবেশ খুব তাড়াতাড়ি হলেও সেটাকেই আঁকড়ে ধরে থাকতে হয় বাকিটা জীবন। তাই বিয়ের আগে থেকে রোমান্টিকতার পাশাপাশি বাস্তবিক বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করা খুবই প্রয়োজনীয়। বাস্তবতা মেনে নিতে পারলে দাম্পত্য সম্পর্ক হবে মধুর অটুট, স্থায়ী হবে আজীবন।
বিয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর পরই ছেলে-মেয়ের মানসিক ঘাটতি বেড়ে যায়। নিজের মধ্যে জন্ম নেয় হতাশা আর কৌতূহলপূর্ণ হাজারো প্রশ্ন। নতুন সম্পর্কে আরেকটি পরিবারের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা, মানিয়ে নেয়া, একজনকে নিজের করে ভাবা, নতুন দায়িত্ববোধ- এমন অসংখ্য বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্নতায় আচ্ছন্ন থাকে মন।
আদর্শ জীবনসঙ্গী খুঁজতে
বিয়ে জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, এর উপরই নির্ভর করে আপনার ভবিষ্যৎ জীবনের সুখ ও শান্তি। এমনকি আপনার অনাগত সন্তানের জীবনের চাবিকাঠিও কিন্তু সুপ্ত আছে আপনার বৈবাহিক সম্পর্কের উপর। তাই বিয়ের মত পবিত্র ও সুন্দর একটি সম্পর্কে জড়ানোর আগে অবশ্যই নিজের মনকে বোঝা এবং আপনার সঙ্গী ও তার পরিবারের মানসিকতার বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন।
বুঝে-শুনে সিদ্ধান্ত নিন
নতুন জীবন শুরু করার ক্ষেত্রে আপনার মন থেকে সম্মতি থাকলে তবেই এগান। এমন অনেক ঘটনা আছে যেখানে বিয়ের কদিন পরেই মেয়েটি তার প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যায়। বাড়ি থেকে দেখেশুনে জোর করে বিয়ে দেওয়ার ফলে একটি ছেলের জীবনে দুর্ভাগ্য নেমে আসে এভাবেই। তাই বিয়ের সিদ্ধান্ত অবশ্যই ভেবেচিন্তে নেবেন। বিয়ের সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে আপনার আগামী জীবন। মন থেকে প্রস্তুত হলে তবেই বিয়ের কথা ভাবুন। অন্যের কথায় নয় বরং ভরসা রাখুন নিজের উপর।
নিজেকে আগে গোছগাছ করে বিয়ের জন্য প্রস্তুত করুন। একা অনেকটা সময় কাটিয়ে সঙ্গীর অনুভব করেন কি না, বুঝতে চেষ্টা করুন। যদি একা সময় কাটানো কষ্টকর বোধ হতে থাকে, তবে বিয়ে করে ফেলুন। বিয়ের জন্য মানসিক প্রস্তুতি হিসেবে ইতিবাচক থাকুন ও মন উন্মুক্ত রাখুন।
বাস্তবতা উপলব্ধি করুন
মানসিক প্রস্তুতির গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি হচ্ছে বিয়ের বাস্তবতা উপলব্ধি করা। কেউ কেউ নিজের ভাবনা কিংবা ইচ্ছার সূত্র ধরেই বৈবাহিক সম্পর্কের তাৎপর্য বুঝতে পারেন। আবার অনেক ছেলে বা মেয়ে আগে থেকে এসব বুঝতে পারেন না। জীবনের বাস্তবতা বোঝার সক্ষমতা সবার সমান হয় না। সেক্ষেত্রে মা-বাবা কিংবা কাছের অভিজ্ঞ কেউ ছেলে-মেয়েকে জীবনের বাস্তবতা বুঝিয়ে বলতে পারেন এবং মানসিক প্রস্তুতির বিষয়ে সচেতন করতে পারেন।
প্রয়োজনে নিজেকে সংশোধন করুন
আপনার স্বভাবের কোনো নেতিবাচক দিক থাকলে সেগুলো বিয়ের আগেই সংশোধন করুন। নিজের সব দিক নিয়ে বিয়ের আগে হবু স্বামী-স্ত্রী মিলে আলোচনা করলে বোঝাপড়ার শুরুটা ভালো হবে। সব ভালো কিছুর সঙ্গে অল্প কিছু মন্দও থাকে। ভালোটুকু অর্জনের পাশাপাশি তাই মন্দটুকু গ্রহণ করার মানসিকতাও রাখুন। ছেলে-মেয়ে উভয়েই পরস্পরকে মানিয়ে চলার মানসিকতা থাকলে দাম্পত্য জীবনে অনেক সমস্যা এড়িয়ে চলা সম্ভব।
অহেতুক চিন্তা নয়
ছেলেদের অনেকেই মনে করেন, বিয়ে করতে অনেক টাকার প্রয়োজন, এটা কখনোই ঠিক নয়। আপনি যতটা আয় করছেন, তার মধ্যেই যদি নিজে সন্তুষ্ট থাকেন তাহলে সঙ্গীকেও সুখী করা সম্ভব। বিয়ের পর ছেলেমেয়ে উভয়ের স্বাধীনতা কমে যায়- সমাজে এ ধারণাটি এখনো প্রবল। সেক্ষেত্রে নিজেকেই প্রশ্ন করুন, সমাজের জন্য আপনি নিজেকে কতটুকু উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পেরেছেন। ফলে সংসার বা সঙ্গীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলেই নিজের স্বাধীনতা কমে যায়, এমন ধারণাও দূর হয়ে যাবে।
বিয়ে মানেই ঘরে অশান্তি বলে অনেকের ধারণা। বিষয়টি মনে করার কোনো উপযুক্ত কারণ হয়ত নেই। কারণ, আপনি যখন আপনার সঙ্গীকে তার ভুলত্রুটিসহ মেনে নিয়েছেন, তখন তার সমস্যাগুলোর সমাধা করার দায়িত্বটাও আপনি নিয়েছেন। তাই সংসার নিয়ে হতাশামুক্ত থাকুন, নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করুন। বিয়ে পরবর্তী আপনার সব সমস্যা সঙ্গীর সঙ্গে ভাগ করে নিন। সবসময় মনে রাখতে হবে দু’জনের মেলবন্ধনেই কিন্তু এ সম্পর্কের সৃষ্টি। তাই পরস্পর সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে চেষ্টা করুন।
শাশুড়ি নিয়ে অনেক মেয়ের মনে শঙ্কা থাকে। বিয়ের আগে সুযোগ থাকলে মেয়ের সঙ্গে ছেলের পরিবার কথা বলে নিতে পারেন। তবে শুরুতেই মেয়েকে নেতিবাচক কোনো বিষয় বলা উচিত নয়।
অ্যাডজাস্ট করতে শিখুন
বিয়ের জন্য মানসিক প্রস্তুতি এর পরবর্তী ধাপ হল অ্যাডজাস্ট করতে শেখা। বিয়ের পর সব ধরনের ছেলেমানুষী বাদ দিয়ে পরস্পর এবং পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে চলার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। প্রতিটি পরিবারেরই কিছু আলাদা নিয়মকানুন, আলাদা আচার-ব্যবহার থাকে। সেসব নিয়মকানুন আগে থেকে একটু জানলে পরবর্তী সময় নতুন সদস্যের বুঝতে সহজ হয়। আমাদের সামাজিক রীতি অনুযায়ী, বেড়ে ওঠার সঙ্গীদের ছেড়ে বিয়ের পর একেবারেই নতুন পরিবেশে যেতে মেয়েদের। সেখানে সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয় তাকে। তবে এসব ক্ষেত্রে শুধু মেয়েরাই মানিয়ে চলবে, তা যেন না হয়। মনে রাখবেন বিয়ের পরে মেয়েদের জীবনে বড় পরিবর্তন হয়। আপনার স্ত্রী সব ছেড়ে আপনার পরিবারে এসেছে। নিজ বাড়ি ছেড়ে আপনার বাড়িতে জীবনের শেষ সময়টা পর্যন্ত থাকতে হবে তাকে।
তাই মেয়ে থেকে কনে হওয়ার সময়টিতে ছেলে এবং পরিবারের সদস্যদের সহনশীল এবং সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব রাখতে হবে। মেয়ে হিসেবে আপনি ভাববেন, আপনি কোনো নতুন জায়গায় বা নতুন মানুষের কাছে যাচ্ছেন না; যাদের কাছে যাচ্ছেন তারা কোনো না কোনোভাবে আপনার জীবনেরই একটা অংশ।
বিয়ের জন্য মানসিক প্রস্তুতি হিসেবে পরিবারের ভূমিকা
ছেলের বিয়ের আগেই পরিবারের সদস্যদেরও বিয়ের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেয়া উচিত। ছেলের স্ত্রীকে নিয়ে সদস্যদের আকাশ-কুসুম চিন্তা করা বা উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়া উচিত নয়। এমনকি ছেলেরও উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়া উচিত নয়। অনেক সময় কল্পনা আর বাস্তবতা মিলে যায় না। পরিবারের সদস্যদের উচিৎ, বিয়ে পরবর্তী জীবনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে মেয়ে ও ছেলেকে মানসিকভাবে সমর্থন দেওয়া। সামান্য বিষয়ে ঝগড়ার পরিবর্তে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের মানসিকতা তৈরি করা। বিয়ে এবং শ্বশুর বাড়ি সম্পর্কে মেয়ে ও ছেলের সামনে কোনো নেতিবাচক কথা বলবেন না।
শেষ কথা
বিয়ে মানেই নানা ধরনের প্রস্তুতি। বিয়ের জন্য আয়োজন চলতে থাকে দিনের পর দিন। এসব প্রস্তুতির তোড়জোরে হয়তো বর-কনের মনের খবর জানার অবকাশ হয় না। অনুষ্ঠান আয়োজন কিংবা আনুষঙ্গিক বিষয়ে আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এসবের সঙ্গে যে বর-কনের মানসিক প্রস্তুতির দরকার হয়, তা অনেকেই জানেন না।
মানুষের জীবনের নানা অধ্যায়ের মধ্যে বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটা জীবনকে করে সুন্দর। কিন্তু এই সুন্দর সম্ভাবনাময় জীবনগুলো আরও সুন্দরতর হয়ে উঠতে পারে যদি নবদম্পতি শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে সুস্থ থাকেন।
যে স্বপ্ন নিয়ে বিয়ে এবং সাংসারিক জীবন শুরু হয়, সে স্বপ্ন থাকুক অমলিন। স্বপ্ন ভাঙতে নয়; বিয়ে হোক, রঙ্গিন স্বপ্ন বুনে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। একটু সচেতন, সহযোগিতাপরায়ণ ও বোঝাপড়া ভালো হলে দাম্পত্য জীবন সুন্দর হতে বাধ্য।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা, কাঙ্ক্ষিত বা অনাকাঙ্ক্ষিত সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য মানসিকভাবে তৈরি থাকুন। বিয়ের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে থাকুন। সুখী হোক আপনার দাম্পত্য জীবন।
কল করুনঃ+880-1407-004393 অথবা +88-01782-006615 এ।
আমাদের মেইল করুন taslima55bd@gmail.com
indianpharmacy com http://indiaph24.store/# buy medicines online in india
reputable indian online pharmacy
buying from online mexican pharmacy: mexican pharmacy – pharmacies in mexico that ship to usa
mexico drug stores pharmacies: reputable mexican pharmacies online – buying prescription drugs in mexico
top 10 pharmacies in india https://indiaph24.store/# Online medicine home delivery
best online pharmacy india