3/5 - (1 vote)

বিয়ে কি?

বিয়ে হচ্ছে একজন নারী ও একজন পুরুষের মাঝে সামাজিক বন্ধন, ধর্মীয় রীতিতে নিজেদেরকে আবদ্ধ করে নেয়া, বিয়ে হচ্ছে একটি ইবাদাত। নিজেদেরকে একে অপরের স্বামী-স্ত্রী হিসেবে স্বীকার করে নেয়া। নিজেদের, পরিবারের দায়িত্ব ও ভবিষ্যতে একসাথে থাকার প্রতিজ্ঞা হচ্ছে বিয়ে। বিয়ের জন্য একজন আদর্শ জীবনসঙ্গী খোঁজা খুবই গুরুত্বপূর্ণ

ছেলে-মেয়েরা যেমন পছন্দের অধিকারী/অধিকারিণী হয়?

প্রথম কথা হলো পছন্দের বিষয় টা সবার ক্ষেত্রেই আলাদা হয়। কিন্তু এর মধ্যেও কিছু আছে যা সবার কোনো না কোনো বয়সের পছন্দ হয়ে থকে।

সাধারণত মেয়েরা একটু লাজুক স্বভাবের হয়। অনেকটাই গুছালো হয়। সংসার সামলানো সহ রান্নায় পটু, বিভিন্ন হাতের কাজে অনেক জানাশোনা। এমন গুনাগুন এর অধিকারিণী মেয়েদেরই ছেলেরা অনেক বেশি পছন্দ করে থাকে।

ছেলেদের ক্ষেত্রে স্বভাব টা ভিন্ন, তারা অনেক অগুছালো, কিছুটা অপরিস্কার স্বভাবেরই হয়ে থাকে। তবে, তারা অনেক যত্নশীল ও কাজে মনোযোগী হয়, অনেক আদর করতে জানে, খোঁজখবর নেয়া সহ সময়ের কাজ কিছু টা সময়েই করে নেয়া, দায়িত্বের সাথে অনেক কিছু সামলিয়ে নেয়া এসব কাজে পটু হয় ছেলেরা। উপরের বর্ণনার মেয়েরা এ ধরনের ছেলেদেরই অনেক বেশি পছন্দ করে।

আদর্শ জীবনসঙ্গী খুঁজতে

পছন্দের বিষয়টি একদমই নিজের কাছে। কারো বেলায় এটা সঠিক করে বলা যাবে না কে কেমন পছন্দের জীবনসঙ্গী চায়।

বিয়ের জন্য জীবনসঙ্গীর যে গুণগুলো দেখে নেয়া দরকার?

  • আপনার জীবনসঙ্গিনীর ব্যবহার কেমন তা বিয়ের আগে জেনে নেয়া ভাল
  • কথাবার্তার ধরন কেমন
  • জীবনসঙ্গী কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য?
  • ঘরের প্রতি কতোটা যত্নশীল
  • সংসারের হিসেব, খরচ ও অন্য বিষয়ের প্রতি দায়িত্ব
  • ভালো দোকানে কফি পান করতে চান, না ভালো কফি যে কোনো জায়গা থেকে উপভোগ করতে পারেন
  • সময়ের খেয়াল রাখা ও কাজের প্রতি সময় জ্ঞান
  • স্বাভাবিক কথা বার্তায় নমনীয়তা কতটুকু, স্যরি অথবা ধন্যবাদের অভ্যাস
  • প্রযুক্তির ব্যবহারে পারদর্শিতা আছে কিনা
  • ঘরের জিনিস গুছালো রাখেন নাকি রাখতে সাহায্য করেন
  • অবসর সময় ঘুমিয়ে অতিবাহিত করেন নাকি সৃজনশীলতায়
  • নিজের ও আপনার শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল কতটুকু
  • বই পড়ার অভ্যাস তা কতটুকু
  • কতটা আবেগী আর কতটুকু বাস্তববাদী
  • জীবনসঙ্গীটি কী চান বা ভবিষ্যতের লক্ষ্য কী?
  • সঙ্গী বা সঙ্গিনী আপনাকে নিয়ে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করেন?

বিয়ের পরবর্তী যে জিনিস গুলো আপনার জেনে নেয়া জরুরি?

  • আপনার ও আপনার সঙ্গিনীর রক্তের গ্রুপ কি
  • কোনো ধরনের সংক্রামক রোগ আছে কিনা
  • সন্তান জন্মদানে সক্ষম কিনা (এটি আপনার নিজের জন্যও প্রযোজ্য)
  • ব্লাড ‍সুগার টেস্ট: ডায়াবেটিস আছে কিনা
  • থ্যালাসেমিয়া টেস্টের রেজাল্ট

কেন বিয়ে করবো? বিয়ের ফজিলত কি?

নারী ও পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। নারী ছাড়া পুরুষ এবং পুরুষ ছাড়া নারীর জীবন অসম্পূর্ণ। এমনকি, আল্লাহ তা’লা হজরত আদম (আ:) কে সৃষ্টি করেন এবং হজরত হাওয়া (আ:) কে তাঁর জীবনসঙ্গী সৃষ্টি করেন এবং তাঁদের বিয়ের মাধ্যমে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে দেন। ধর্মীয় অনুশাসন মেনেই বিয়ে করতে হয়। বিয়ের জন্য কোন সামাজিক রীতি নিয়ম আসলে আমাদের সৃষ্টি মাত্র।

ইসলাম ধর্ম মতে বিয়ে হচ্ছে নবীজির সুন্নত। সুন্নত অনুযায়ী আমল করা উচিত। বিয়ে ছাড়া একজন নারী আসলে মিসকিন, তেমনি বিয়ে ছাড়া একজন পুরুষ ও মিসকিন যদিও সে অনেক সম্পদের মালিক হয়।

বিয়ে করার কি কি উপকারিতা?

  • গুনাহ ও পাপাচার থেকে নিজেকে সংবরণ, সতীত্ব রক্ষা করতে পারে
  • নারী জাতির তত্ত্বাবধান ও রক্ষণাবেক্ষণ হয়
  • নারীর সম্মানজনক জীবন-জীবিকা সহজ হয়
  • পুরুষ একজন আমানতদার নির্ভরযোগ্য জীবনসঙ্গী লাভ করে
  • বৈধ পন্থায় মানববংশের বিস্তার হয়
  • নারী-পুরুষ উভয়ের মানসিক স্বস্তি, তৃপ্তি ও প্রফুল্ল অর্জন
  • রিজিকে বরকত ও জীবনে প্রাচুর্য
  • পুরুষরা দায়িত্বসচেতন ও কর্মমুখী হয়
  • স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে উৎসাহ দিয়ে সুন্দর পৃথিবী বিনির্মাণের পথ সুগম করে

সুখী হতে চাইলে কেমন জীবনসঙ্গী খুজবেন?

সাবালক কনের অনুমতি নেওয়া অপরিহার্য, কারণ সংসার করার জন্য এটা অনেক গুরুত্বের। যদি ইচ্ছের বাইরে জোর করে বিয়ে দেয়া হয় সেই বিয়ে দীর্ঘস্থায়ী হবে না।

বিয়ের পর জীবনে সুখী হয়ে থাকাটা অনেক গুরুত্বের। কিভাবে সুখী বিবাহিত জীবন পালন করবেন এটাই প্রশ্ন।

আন্তরিকতা শুধু বিয়েতে না, যে কোনো সম্পর্কেই অনেক বেশী প্রয়োজন। আন্তরিকতা যদি না থাকে একে অপরের প্রতি তাহলে শ্রদ্ধা বা সমমান এগুলো ও হয়তো আসবে না। সুখের হবে না বাকি জীবন। আন্তরিক ব্যক্তি বলতে যিনি হবেন বিনীত, নমনীয়, বিশ্বাসযোগ্য, ভালো স্বভাব, সহযোগী মনোভাবাপন্ন, ক্ষমাশীল, উদার ও ধৈর্যশীল।

ভালোবাসা একজন নারী ও পুরুষের মাঝে হৃদয়ের অটুট বন্ধন তৈরী করে। যা বিয়ে পরবর্তী জীবনে সুখী হবার জন্য আরেকটি অধ্যায়। এছাড়াও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অভ্যেস, নিশ্চন্তে ঘুমানো, পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো এগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

পাত্র-পাত্রীর লক্ষণীয় গুণাবলি পাত্রী দেখার সঠিক পদ্ধতি?

পাত্র-পাত্রী অবশ্যই বিবাহ যোগ্য হতে হবে। পাত্রের অবশ্যই বিয়ের জন্য সুস্থ ও বিয়েতে সক্ষম হতে হবে। অক্ষম পাত্রের বিয়ে দিলে সেটা সংসার এর অশান্তির কারণ হয়ে যেতে পারে। পাত্রকে স্ত্রীর প্রয়োজনীয় খরচ চালানোর যোগ্য হতে হবে। একজন দ্বীনদার ব্যক্তি কে বিয়ে করা উচিত না হলে বিয়ে পরবর্তী জীবন সুখের নাও হতে পারে। চরিত্র এমন একটি বিষয় যা ভালো না হলেই বিপদ, তাই সৎচরিত্র নারী-পুরুষ কে বিয়ে করা উচিত।

নারী যদি স্বামীর অনুগত না হয় সেক্ষেত্রেও বিপদের সম্ভাবনা আছে, তাই বলে স্বামী জোর পূর্বক কোনো কাজ চাপিয়ে দিতে পারবে না। বংশমর্যাদাসম্পন্ন, স্নেহপরায়ণ, অধিক সন্তান প্রসবে উপযোগী, সংসারী ও সুন্দরী এইসব গুনাগুন থাকা নারীরই ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বের।

যে গুণ দেখে জীবনসঙ্গী নির্বাচন করা উচিত?

  • সরল ও ধার্মিক প্রকৃতির
  • নিরবতা এবং কোমলতা বা নরম স্বভাব
  • সুশিক্ষায় শিক্ষিত, বাস্তব জ্ঞান রাখা
  • কথায় কাজে সৎ, ন্যায়পরায়ণ
  • দায়িত্ববান ব্যক্তিত্ব
  • পরিষ্কার –পরিচ্ছন্ন মানুষ
  • ভালো ব্যবহারবিধি ও সহনশীলতা
  • অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন
  • সৎ চরিত্রের অধিকারী হওয়া

জীবনসঙ্গী ‍নির্বাচনে শেষ কথা

বাস্তববাদী কাউকে প্রয়োজন আপনার জীবনে। আপনার সঙ্গী হিসেবে ক্যারিয়ারে সফল এমন কেউ আসা উচিৎ। তাহলে আপনার দুজন একসাথে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো সহজে সাজাতে পারবেন এবং জীবনে লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন। একইসাথে, বকেজন আরেকজনের কাজ-ব্যস্ততা-পরিকল্পনাকে সম্মান করার মাধ্যমে সম্পর্ককে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।

বিশ্বস্ত, দৃঢ় মনোবল এবং অন্যের উপকারে এগিয়ে যায় এমন একজন জীবনসঙ্গী আপনার একান্ত প্রয়োজন। কেবল এমন একজন মানুষই পারে আপনাকে মূল্য দিতে এমন আপনার বিশ্বাসের মর্যাদা ধরে রাখতে। সুতরাং এমন একটি মানুষের সাথে জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া আপনার জন্যে সুখকর হতে পারে।

বিয়ের পাত্রী দেখার সময় সতর্ক থাকতে হবে। কখনো কোনো মেয়ের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দিলে সেখানে অন্য পাত্র পক্ষের প্রস্তাব দেয়া যাবে না, যতক্ষন পর্যন্ত আগের বিয়ের প্রস্তাব পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান না হয়। বিয়ে জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাই বিয়েতে যেন কোনোভাবে কারো মান সম্মান, মর্যাদা এসব ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে উভয় পক্ষের।

হাতের পাঁচটি আঙুল যেমন কখনও সমান হয় না, তেমনি দুটি মানুষের মধ্যে সবকিছু কখনোই এক হবে না। তবে তাদের মধ্যে যেন অন্তত দুটি বা তিনটি শখ বা অভ্যাসের মিল থাকে এতটুকু নিশ্চিত হতে হবে।

একমাত্র নিজেকে জানার মাধ্যমেই জানবেন কেমন জীবনসঙ্গীকে আপনি খুঁজছেন। আর যদি এখনও না জানেন তাহলে হতাশার কিছু নেই। হতে পারে আপনি যা আশা করছেন তা আপনার জীবনসঙ্গীর মধ্যে নাও থাকতে পারে কিন্তু যদি ভালবাসা থাকে তাহলে আপনা-আপনি তা চলে আসে।

বিয়ে সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য, সেবা, এবং পরামর্শ পেতে যোগাযোগ করুন তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়ার সাথে।
কল করুনঃ+880-1407-004393 অথবা +88-01782-006615 এ।
আমাদের মেইল করুন taslima55bd@gmail.com

14 COMMENTS

    • আমি এমন একজন মেয়েকে বিয়ে করবো।সে যেন আদর্শবান মেয়ে হয়। তার রং কালো হোক, কোন সমস্যা নেই। তার মনটা সুন্দর হতে হবে।

  1. আমি একজন দ্বিনদারী মেয়ে বিয়ে করতে চাই,, মেয়ে সুন্দরী হতে হবে

  2. I am sure this article has touched all the internet people, its
    really really good piece of writing on building up new blog.

  3. Nice post. I used to be checking constantly this weblog and I am impressed!
    Very useful info specially the closing phase 🙂 I deal with such information much.
    I used to be looking for this particular info
    for a long time. Thank you and best of luck.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here