5/5 - (1 vote)

বর ও কনের গায়ে হলুদের সাজ নিয়ে এই কন্টেন্টটি সম্পূর্ণ তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়ার নিজস্ব। তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়ার পূর্ববর্তী অনেকগুলো ব্লগ হুবহু কপি করে অনেক ম্যাট্রিমনি সাইটে পাবলিশ করা হয়েছে, এ ব্যাপারটি আমাদের নজরে এসেছে। উক্ত ম্যাট্রিমনি সাইটের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ব্লগের সম্পূর্ণ বা আংশিক অংশ কপি করে অন্য কোনো সাইট বিশেষ করে যেকোনো ম্যাট্রিমনি ব্লগে পাবলিশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‘হলুদ বাটো মেন্দি বাটো, বাটো ফুলের মৌ; বিয়ের সাজে সাজবে কন্যা করম চারণ বউ’ অথবা ‘লিলাবালী লিলাবালী বড় যুবতী সই গো, কী দিয়া সাজাইমু তোরে’ গানগুলো শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে গ্রামের বাড়ির উঠানে অথবা শহরে ফ্ল্যাটের ছাদে জাঁকজমকপূর্ণ গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান, আর মঞ্চে বর ও কনের নামের পাশে লেখা ‘হলুদ ছোঁয়া’, ‘হলুদ সন্ধ্যা’ কিংবা ‘গায়ে হলুদ’ ইত্যাদি। বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রথম ধাপটি হলো গায়ে হলুদ। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় কনে-বরকে হলুদ লাগিয়ে। গায়ে হলুদ এর অনুষ্ঠানই সবচেয়ে বেশি জাঁকজমকপূর্ণ হয়ে থাকে। তাই গায়ে হলুদের সাজ এ বর ও কনের সাজ, পোশাক, স্টেজসহ সবকিছুতেই চাই পরিপূর্ণতা আর বর ও কনেকে দেখাতে হবে সব থেকে সুন্দর। আজকের আর্টিকেলে জেনে নিন পারফেক্ট গায়ে হলুদের সাজ এর কিছু টিপস।

গায়ে হলুদের স্টেজ

বর্তমানে গায়ে হলুদের স্টেজ বা মঞ্চ নিয়েও মানুষ বেশ সচেতন। গায়ে হলুদের মঞ্চ ফুল দিয়ে সাজানো হয়। স্টেজ সাজানোর জন্য গাঁদা ও গোলাপ ফুলকে প্রাধান্য দেয়া হয়। অনেকে জারবেরা, গ্লাডিওলাস, জিপসি, ক্যারনসহ অন্যান্য ফুলও ব্যবহার করে থাকেন। অনেকে নিজেরাই আইডিয়া বের করে স্টেজ সাজানোর চেষ্টা করেন। অনেকে আবার নির্দিষ্ট থিমের ওপর গায়ে হলুদের মঞ্চ সাজানোর জন্য ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের সাহায্য নিয়ে থাকেন।

হলুদের স্টেজ সাজানোর সময় আলোকসজ্জার কথাটাও মাথায় রাখতে হবে। এক্ষেত্রে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানটি কোথায় করছেন এবং কখন করছেন তার উপর ভিত্তি করে আলোকসজ্জা করতে পারেন। অনুষ্ঠানটি দিনের বেলা হলে উজ্জ্বল গোলাপি, হালকা সবুজ অথবা গেরুয়া ইত্যাদি রঙ ব্যবহার করতে পারেন। আর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানটি রাতের বেলায় করলে ছোট ছোট বাল্ব, কিংবা ল্যান্টার্ন হতে পারে ভালো অপশন। এছাড়া নানা ডিজাইনের ঝালর এবং ঝাড়বাতির ব্যবহার করতে পারেন। রাতের অনুষ্ঠানে উজ্জ্বল রঙের পাশাপাশি জমকালো রং, যেমন—সোনালি, রুপালি ইত্যাদি দারুণ মানাবে।

আদর্শ জীবনসঙ্গী খুঁজতে

গায়ে হলুদে কনের পোশাক

গায়ে হলুদ নামটির সঙ্গে মিল রেখে প্রাচীনকাল থেকেই মেয়েরা হলুদ রঙের শাড়ি পরে আসছেন। তবে এখন কেবল হলুদ নয়, বরং একরঙা লাল, কাঁচা মেহেদির রং অথবা সবুজ রঙের শাড়িও পরেন অনেকে। এক্ষেত্রে জামদানি, সিল্ক ও কোটা শাড়ি এই শীতে হলুদের সাজে আপনি খুব সহজেই বেছে নিতে পারেন। শাড়িতে হালকা থাকলেই ভালো হবে। হলুদের অনুষ্ঠানে তো কনে এবং তার বান্ধবীরা এখন একই রঙের শাড়ি পরেন। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে শাড়ি সাধারণত একপ্যাঁচেই পরতে দেখা যায়। বাঙালিয়ানা কিংবা ব্লাউজের ওপর কটির মতো করেও একপাশে লম্বা আঁচল টেনে শাড়ি লেহেঙ্গার মতো পরতে পারেন।

অনুষ্ঠান যদি জামদানি শাড়ি পরেন তাহলে হলুদ জামদানি শাড়ির পাড়ে সবুজ সুতার কাজ বা সবুজ জামদানির সঙ্গে পাড়ে হলুদ সুতার কাজ সবচেয়ে ভালো দেখাবে। যার যে রঙ পছন্দ সেই রঙের শাড়ি পরুন। এখন তো বিভিন্ন ডিজাইনের ফ্যাশনেবল ব্লাউজ ট্রেন্ডিং। যে রঙের শাড়ি পরবেন, তার সঙ্গে কনট্রাস্ট করে ব্লাউজ পরুন। যেমন হলুদ শাড়ি হলে লাল ব্লাউজ কিংবা লাল শাড়ির সঙ্গে সোনালি ব্লাউজ পরুন। এক রঙের শাড়ি হলে ব্লাউজের ডিজাইনে একটু অভিনবত্ব আনতে পারেন। শাড়ি এবং ব্লাউজকে একটু অন্য লুক দিতে শাড়ির আঁচলে পমপম আর ব্লাউজে লটকন লাগাতে পারেন।

নিজের বাড়িতেই গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হলে অনেকে শাড়ির বদলে লং কামিজ পরতে পছন্দ করেন। এক্ষেত্রে নিজের কমফোর্টটাই হলো বড় কথা। আপনি যদি কমফোর্ট ফিল করেন তাহলে পরে নিতে পারেন লেহেঙ্গা অথবা লং কামিজ।

মেহেদীর সাজ

হলুদের কথা শুনলেই যেন বাটা হলুদ আর মেহেদিরাঙা কনের ছবি ফুটে ওঠে চোখের সামনে- হাতের তালুতে গোল বৃত্ত করে বাটা মেহেদি আর আঙুলের মাথাভরা লাল টুকটুকে রঙ নতুন বউয়ের হাত। কনের হাতে মেহেদির আলপনা গায়ে হলুদের সাজ এ যোগ করে বাড়তি মাত্রা। তাই কনে বা নববধূর মেহেদি হওয়া চাই সবচেয়ে আকর্ষণীয়। বিয়ের কনের দুই হাত ভরে মেহেদি দিলে দেখতে বেশ সুন্দর লাগে। মেহেদী রাতে কনের বোন এবং বান্ধবিরা মিলে কনের হাতে মেহেদীর আলপনা আঁকে। বর্তমানে নানারকম টিউব মেহেদি পাওয়া যায়, যা দিয়ে সূক্ষ্ম নকশা করা যায়। অনেকে হলুদের পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে অনেকে গ্লিটার দিয়েও নকশা করে নেন হাতের ওপর। আর গায়ে হলুদের আয়োজনে ছোট-বড় সবাই হাত ভরে এঁকে নেন পছন্দের মেহেদি বা আলপনা।

অনেকেই আছেন যারা মেহেদী ব্যবহার করতে পারেন না, অ্যালার্জির কারণে র‌্যাশ বের হয়। তাই মেহেদী লাগানোর আগে একবার ট্রাই করে দেখতে পারেন মেহেদিতে আপনার স্কিনে অ্যালার্জি বেরোচ্ছে কি না। আবার অনেক সময় স্কিনে কাঁচা হলুদ পেস্ট লাগালেও  র‌্যাশ বের হয় ও ত্বক চুলকায়। সেক্ষেত্রে কাঁচা হলুদের সঙ্গে মশুরের ডাল বাটা, বাদাম বাটা, উপটন যেকোনো উপকরণ বাটা হলুদের সাথে মিলিয়ে নিলে র্যাশশ থেকেও রেহাই পাওয়া যায়।

গায়ে হলুদের গয়না

আগে গায়ে হলুদের সাজ এ কনেকে কাঁচা ফুলে দিয়ে সাজানো হতো। তবে এখন কাঁচা ফুলের ব্যবহার না থাকলেও শাড়ির সঙ্গে মিল রেখে কাপড়ের তৈরি ফুল ব্যবহার করা হয় বেশী। অবশ্য গায়ে হলুদে কাঁচা ফুলের গয়নাই বেশি মানানসই। বাজারে শুকনো ফুলের সঙ্গে পুঁতি-জরির কাজ, স্টোন দিয়ে তৈরি কৃত্রিম ফুলের মালা কিনতে পাবেন, অথবা সাজের ভিন্নতা আনতে চাইলে রুপা বা পুঁতির গয়নাও পরতে পারেন। এর সাথে হাতে থাকতে পারে ফুলের গয়না আর হাতভর্তি কাচের চুড়ি। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে, কনেকে সাজাতে কোনোভাবেই ভারী ফুল দেওয়া যাবে না। ভারী ফুল দেওয়া হলে দীর্ঘ সময় ধরে তা রাখতে কনের কষ্ট হতে পারে।

পুঁতি ও ফিতার ফুলের নকশা করা গয়নার পাশাপাশি অনেক কনেই এখন কুন্দন, মুক্তা বা রুপার গয়না পরতে পছন্দ করেন। আর গাঁদা ফুলের পরিবর্তে লিলি, কসমস, অর্কিড ইত্যাদির ব্যবহারও দেখা যাচ্ছে। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে ফুলের পাশা বা মাথার বড় টিকলি ব্যবহার করতে পারেন। টিকলি বা মুকুটের পরিবর্তে গায়ে হলুদের ড্রেস এর সাথে ম্যাচিং করে উজ্জ্বল রঙের টিয়ারাও পরতে পারেন। আর যদি৩ গায়ে হলুদে চুড়ি না পরে একটু অন্য কিছু পরার কথা ভাবেন তাহলে ফুলের রতন চূড় হবে বেস্ট অপশন।

গায়ে হলুদে কনের মেকআপ

গায়ে হলুদে কনের জন্য একদম ন্যাচারাল অথবা হালকা মেকআপ করাই ভালো। গায়ে হলুদে যদি হলুদ রঙের শাড়ি পরেন তাহলে মেকআপ হবে গোল্ডেন, ব্রাউন অথবা ব্রোঞ্জ শেডের- যেটা আপনার ভালো লাগে। চোখের সাজেও গোল্ডেন, ব্রোঞ্জ বা ব্রাউন আইশ্যাডো ব্যবহার করলে সুন্দর দেখাবে, সঙ্গে গাঢ় করে আইলাইনার। হলুদের দিন অনেক মেয়েই যেটা করে সেটা হচ্ছে মুখে মেকআপের পরত চড়িয়ে-চড়িয়ে সাদা করে দেয়! গায়ের রঙের সঙ্গে মানানসই করে মেকআপের শেডগুলো বাছলে সেটা দেখতে বেশি ভালো লাগে। গায়ে হলুদে যেটা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় সেটা হচ্ছে হলুদের ব্যবহার। সুতরাং মেকআপ এবং মেহেদী যত কম ব্যবহার করা হবে ততই ভালো। মেহেদী রাতের কমপক্ষে ১৫ দিন আগে ফেসিয়াল, ফেয়ার পলিশ, ওয়্যাক্সিং করিয়ে নেওয়া ভালো। এতে মোটামোটি উজ্জ্বল দেখাবে। আর ছবিতেও ভালো দেখা যায়।

বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোর আগেই নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে হবে। নিজের স্কিনের সঙ্গে ভালো যায়, এমন ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। মাঝেমধ্যে অয়েল ম্যাসাজ করে নিলে ত্বক ভালো থাকবে। আর কিছুদিন আগে থেকে প্যাক ব্যবহার করলে ত্বকের গ্লো ঠিক থাকবে। বিয়ের আগে দিনের বেলায় শপিং বা অন্যান্য কাজে বাইরে বের হলে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। আর যদি স্কিনে পিম্পল, র‌্যাশ বা ব্রেকআউট থাকে, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে কথা বলা ভালো।

গায়ে হলুদে বরের সাজ

হলুদে বরের প্রধান পোশাক হচ্ছে পাঞ্জাবি। সুতি, সিল্ক অথবা হাফ সিল্কের পাঞ্জাবি পরতে পারেন। বরের গায়ের রঙ, মুখের গড়ন ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে পাঞ্জাবির রঙ নির্ধারণ করা ভালো। এখন তো বর-কনে গায়ে হলুদেও ম্যাচিং ড্রেস পরেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হলুদের অনুষ্ঠানে বর এবং বরপক্ষের ছেলেরা হলুদ, লাল, সাদা অথবা বেগুনী রঙের পাঞ্জাবি পড়ে থাকেন। গায়ে হলুদে পাঞ্জাবির সাথে নাগরা বেস্ট অপশন। বর-কনে দুজনের জুতাই হতে হবে অনুষ্ঠানের উপযোগী। যে জুতাগুলো পরতে কষ্ট হয় তা না পরাই ভালো।

গায়ে হলুদের সাজ এ অন্যান্য অনুষঙ্গ

এখন তো বেশিরভাগ বিয়ের আগে বর ও কনের গায়ে হলুদ একই সাথে একই জায়গায় করা হয়। একটা সময় ছিলো যখন দেখা যেত বর এবং কনে পক্ষ দুদিন দু’বাড়িতে আলাদা আলাদা করে হলুদের কুলা বা ডালা সাজিয়ে নিয়ে হলুদ দিতে যাচ্ছে। ফুল, ফিতা, কাগজ, পলি, লতাপাতা ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হলুদের ডালা-কুলায় থাকে বর-কনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। এছাড়া এতে আরও থাকে- ঝুড়ি, ছোট পালকি, তোয়ালে, প্রদীপ বাটি ইত্যাদি। অনেকে আবার হলুদের ডালার ভেতরে আলাদা আলাদা জিনিসে আলাদা আলাদা চিরকুট লিখে দেন। কেউ কেউ ফুলের সাথে ছোট ছোট সাবান, চিরুনি, মোমবাতি, রাখী, চাবির রিং, চকলেট ইত্যাদি দিয়ে উপহারের প্যাকেটও বানান।

গায়ে হলুদের সাজ এ শেষ কথা

বিয়ের দিনের মতই গায়ে হলুদের দিনটাকেও স্মরণীয় করে রাখতে চায় সবাই। বিয়ের যত তোড়জোড় আর হৈ-হুল্লোড় তো শুরু হয় এই হলুদবরণ উৎসব থেকেই। সময়ের স্রোতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিয়ের পোশাক থেকে থেকে গয়না, আপ্যায়নের ধরন, এমনকি রীতিনীতি-তেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। তবে গায়ে হলুদ উৎসবটা এখন রং ও ছন্দের খেলা। তাই তো এইদিনে সাজ-পোশাকে অনন্য হয়ে ওঠার আকাঙ্ক্ষা থাকে সব বর-কনেরই।

বিয়ে সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য, সেবা, এবং পরামর্শ পেতে যোগাযোগ করুন তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়ার সাথে।
কল করুনঃ+880-1407-004393 অথবা +88-01782-006615 এ।
আমাদের মেইল করুন taslima55bd@gmail.com

9 COMMENTS

  1. Right here is the right website for everyone who wishes to understand this topic. You realize so much its almost tough to argue with you (not that I actually will need to…HaHa). You definitely put a fresh spin on a subject which has been discussed for ages. Wonderful stuff, just excellent.

  2. Right here is the right blog for anyone who hopes to understand this topic. You understand so much its almost tough to argue with you (not that I personally would want to…HaHa). You certainly put a brand new spin on a subject which has been discussed for many years. Excellent stuff, just excellent.

  3. An outstanding share! I’ve just forwarded this onto a friend who had been doing a little research on this. And he in fact ordered me breakfast because I discovered it for him… lol. So allow me to reword this…. Thanks for the meal!! But yeah, thanks for spending some time to talk about this issue here on your site.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here