4.3/5 - (6 votes)

পুরুষের ত্বকের যত্ন নেয়ার উপায়- ত্বক ভালো রাখার টিপস নিয়ে এই কন্টেন্টটি সম্পূর্ণ তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়ার নিজস্ব। তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়ার পূর্ববর্তী অনেকগুলো ব্লগ হুবহু কপি করে অনেক ম্যাট্রিমনি সাইটে পাবলিশ করা হয়েছে, এ ব্যাপারটি আমাদের নজরে এসেছে। উক্ত ম্যাট্রিমনি সাইটের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ব্লগের সম্পূর্ণ বা আংশিক অংশ কপি করে অন্য কোনো সাইট বিশেষ করে যেকোনো ম্যাট্রিমনি ব্লগে পাবলিশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ত্বকের যত্ন কি শুধু মেয়েদেরই প্রয়োজন? অনেকেই বলেন, ”রূপচর্চা আর সাজগোজ- সে তো মেয়েদের বিষয়।” কিন্তু এই ধারণাটা কখনোই ঠিক নয়। যেহেতু ছেলেদের কাজের প্রয়োজনে বাইরে বেশি যেতে হয় সেহেতু রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, ধুলোবালির আস্তরণে ত্বকের রঙ তামাটে, রুক্ষ ও ম্লান হয়ে যায়। এজন্য ত্বকের যত্ন নিলে করলে চেহারার উজ্জ্বলতা আবার ফিরে পাওয়া সম্ভব। ছেলেদের ত্বক মেয়েদের তুলনায় অনেক বেশি পুরু। তাই মেয়েদের ত্বকচর্চা থেকে পুরুষদের রূপচর্চার ধরনটাই আলাদা। আজকের আর্টিকেলে আমরা তুলে ধরব কিভাবে ছেলেদের ত্বকের হারিয়ে যাওয়া উজ্জ্বলতা আবার ফিরিয়ে এনে তাকে আরও সুন্দর করা যায়।

ত্বকের যত্ন নিতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন

বেশীরভাগ ছেলেরা মনে করেন, তাদের সানস্ক্রীন ব্যবহার করতে হয় না। কিন্তু শীত বা গ্রীষ্ম যে কোন ঋতুতেই বাইরে বেশিক্ষণ থাকলে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ছেলেদের ত্বকের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। সূর্যের তাপে ত্বকে ছোপ ছোপ দাগ ও সানবার্ন হয়। এজন্য গরম ও শীত সবসময়ই বাইরে যাওয়ার অন্তত ১৫ মিনিট আগে ছেলেদের উচিত ময়েশ্চারাইজ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। সানস্ক্রিন মুখের ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির থেকে বাঁচিয়ে রাখে। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিমের এসপিএফ ৪০ থেকে ৫০ হওয়া দরকার। তাই সানস্ক্রীন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সান প্রটেকশন ফ্যাক্টর বা এসপিএফ ৩০’র কম নন-কমিডোজেনিক সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার না করাই ভালো।

সানস্ক্রিন ত্বককে উজ্জল দেখতে ও তরুণ রাখতে সহায়তা করে। মনে রাখবেন, ৪ ঘণ্টা পর সানস্ক্রিন লোশন বা সানস্ক্রীন ক্রীমের কার্যকারিতা কমে যায়। তাই ত্বকের যত্ন নিতে প্রথমবার সানস্ক্রিন লোশন লাগানোর ৪ ঘণ্টা পর ধুয়ে আবার লাগিয়ে নিন। প্রতিদিন সকালে বাইরে যাওয়ার আগে ত্বকের যত্নের রুটিনের অংশ হিসাবে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। সানস্ক্রীন কম্পিউটার বা মোবাইলের পর্দা থেকে যে অতিবেগুনি রশ্মি নির্গত হয় তা ত্বককে রক্ষা করে। তবে আপনি যদি ক্রমাগত সূর্যের সংস্পর্শে বা রোদের মধ্যে কাজ করেন তবে আপনার প্রতি ৪ ঘণ্টা অন্তর সানস্ক্রিন লাগাতে হবে।

আদর্শ জীবনসঙ্গী খুঁজতে

সানস্ক্রিনের বিকল্প হিসেবে টক দই, গোলাপজল ও মুলতানি মাটি একত্রে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগাতে পারেন। তাছাড়া আটা, টমেটো ও কাঁচা হলুদের রস দিয়েও ফেসপ্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। মুখ ধোয়ার ১৫ মিনিট পর গোলাপজল টোনার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

নিয়মিত সঠিক পদ্ধতিতে শেভ করুন

যখন তখন দাড়ি শেভ করলে আপনার ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। আপনার ত্বক যদি অতিরিক্ত সেনসিটিভ হয় তাহলে গোসলের সময় বা গোসলের পরপরই শেভ করা উচিত। গোসলের পর ত্বক ও দাড়ি নরম থাকে, ফলে শেভ করা সহজ হয়। শেভিং ক্রিম লাগানোর আগে পানি দিয়ে ত্বক ভালোভাবে ভিজিয়ে নেবেন। শেভ করার জন্য ভেজা ও উষ্ণ ত্বকে হালকা শেভিং জেল বা ত্বক মসৃণ রাখে এমন জেল ব্যবহার করতে পারেন। এতে দাড়ি নরম থাকবে। শেভ করার এক মিনিট আগে ত্বকে শেভ জেল লাগাতে হবে। শেভ করার পর হালকা করে বরফ ঘসে নিতে হবে , এর পর লাগিয়ে নিন ভাল মানের আপটার শেভ লোশন। তবে অনেকেরই শেভ করার পর ত্বকে র‌্যাশ দেখা দেয়। ত্বকের যত্ন নিতে যাদের র‌্যাশ হতে থাকেই, তাদের আফটার শেভ লোশন এড়িয়ে চলা ভালো।

অনেকেই শেভিং করার সঠিক পদ্ধতি জানেন না। সঠিক পদ্ধতিতে ত্বকের মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে,  রেজার বার্ন বা রেজার বাম্পের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। শেভ করার সময় রেজার বা ব্লেড সবসময় নিচের দিকে টানবেন। অনেক সময় ছেলেরা নিখুঁতভাবে শেইভ করার জন্য দাড়ি যে পাশে উঠে তার বিপরীত দিক থেকে শেইভ করেন। যা করা একদমই উচিত নয়। কারণ এতে ব্লেডের আঘাতে চামড়া কেটে যেয়ে লোমকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং কেটে যাওয়া স্থানে প্রদাহের সৃষ্টি হতে পারে। তাই সঠিক উপায়ে দাড়ি কামাতে হবে, এতে ত্বক মসৃণ থাকবে। তাছাড়া বারবার একই জায়গায় শেইভ না করে মুখের প্রতিটি অংশে একবার করে শেইভ করা ভালো।

যাদের ত্বক বেশি সংবেদনশীল, তারা তিন থেকে পাঁচবার শেভের পরই ব্লেড বদলে ফেলবেন। শেভিংয়ের পরে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম লাগানোটা জরুরি। আর ত্বকে ব্রণ থাকলে প্রতিদিন শেভ না করে একদিন পরপর শেভ করাই ভালো। শেভ করার পাঁচ মিনিট আগে ভালো ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। শেভের আগে রেজারটি অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে উষ্ণ গরম পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রেখে তারপর শেভ করুন। এজন্য ত্বকের যত্ন নিতে শীতকালে শেভ করার পরে মুখে মশ্চারাইজার ক্রিম মাখবেন। তাহলে সারাদিন ত্বক সুন্দর থাকবে।

নিয়মিত ফেসিয়াল করুন

ছেলেরা সারাদিন বাইরে কাজ করেন। বাইরে গরম, আবার অফিস বা ঘরের ভেতর এসি। একবার ঠান্ডা আবার গরম এ রকম মিশ্র আবহাওয়ায় বারবার যাওয়া-আসা আর বিভিন্ন দূষণ ত্বককে করে তোলে শুষ্ক ও খসখসে। ছেলেদের ত্বকের সবচেয়ে বেশি সমস্যার জায়গা হলো ভ্রুরেখার ভাঁজ, চোখের কোলে কুঁচকে যাওয়া দাগ, ঝুলে পড়া গাল আর এবড়ো-খেবড়ো ছিদ্রযুক্ত অমসৃণ ত্বক। এজন্য ত্বক বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন বিউটি এক্সপার্টকে দিয়ে প্রতিমাসে অন্তত একবার ফেসিয়াল করানো উচিত।

যানজট আর ধুলাবালি পার করে অফিসে পৌঁছে প্রথমেই ব্যাগে রাখা ফেসওয়াশ দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন। এতে রিফ্রেশ লাগবে, ভালোভাবে কাজে মনোযোগী হওয়া যাবে। ত্বকে ব্রণের সমস্যা থাকলে আয়ুর্বেদিক ফেসিয়াল করালে উপকার পাবেন। ঘরে বসে ত্বকের যত্ন নিতে চাইলে রোদেপোড়া ভাব কমাতে চন্দনের প্যাক লাগাতে পারেন। যাদের শুষ্ক ত্বক তারা সানবার্ন ফেসিয়াল করাতে পারেন। এটা রোদেপোড়া ত্বকের জন্যও উপকারী। যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তারা করাতে পারেন অ্যালোভেরা ও গোল্ড ফেসিয়াল।

আর এখন ত্বকের যত্ন নিতে বাজারে নানা ধরনের স্ক্র্যাব পাওয়া যায়। এসব স্ক্র্যাব দুই তিনদিন পর পর মুখে লাগিয়ে কিছু সময় মালিশ করে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া মাঝে মাঝে রাতে ঘুমানোর আগে উপটান লাগিয়ে কিছু সময় রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।

ত্বকের যত্ন নিতে ক্লিনজার

ত্বকের যত্ন নিতে ক্লিনজার ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মেয়েদের ত্বকের তুলনায় ছেলেদের ত্বক শক্ত আর খসখসে হয়। ত্বকের যত্ন নিতে এমন ক্লিনজার ব্যবহার করুন যা আপনার ত্বকের গভীরে গিয়ে মৃত কোষগুলোকে বের করে দেবে। একইসঙ্গে ত্বকের ওপর লেগে থাকা ধুলোময়লাসহ জীবাণুও পরিষ্কার করবে। ত্বকের আর্দ্রতা কোনোভাবেই নষ্ট হয় না, এমন ক্লিনজারই সবসময় ব্যবহার করুন। অফিসে বা বাইরে থেকে ফিরে ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। প্রতিদিন সকালে এবং রাতে একবার করে ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেললেই ময়লা দূর হয়ে যায় অনেককাংশে।

অনেক ছেলেদের মুখের ত্বক মেয়েদের তুলনায় শক্ত হয় যা ধুলাবালি ও ময়লায় নষ্ট হয়ে যায়। সেই জন্য ত্বকের যত্ন নিতে প্রতিদিন সকালে উঠে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এরপর মুখে ফেস ওয়াশ মেখে নিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে করে ক্লিনজার বা ফেসওয়াশ ত্বকের গভীরে গিয়ে কাজ করতে পারবে।

ক্লিনজার বেছে নিতে হবে নিজের ত্বক অনুযায়ী। সেনসিটিভ, স্বাভাবিক, শুষ্ক, তৈলাক্ত বা কম্বিনেশন ত্বকের ধরন অনুযায়ী বেছে নেবেন আপনার ত্বক সুরক্ষা দেবে এমন প্রসাধনী। ত্বকের চরিত্রের ওপর ভিত্তি করে ঠিক ক্লিনজার বেছে নিতে পারলে তা ত্বকের ছিদ্রগুলোকে বন্ধ করতে এবং ব্রণ প্রতিরোধে সহায়তা করে। ব্রণ বা অ্যাকনের সমস্যা থাকলে ‘অয়েল ফ্রি’ ক্লিনজার ও ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের যত্ন নিতে সেনসিটিভ ত্বক হলে কোমল, সুগন্ধহীন প্রসাধনী ব্যবহার করবেন।

সাধারণত চোখের নিচের অংশটা একটু কালচে রঙের হয়। কারণ এই অংশের আর্দ্রতা সারা মুখের তুলনায় কম হয়। এই কালো অংশতেই বয়স বাড়লে দেখা দেয় বলিরেখা। তাই ত্বকের যত্ন নিতে চোখের তলায় হাইড্রেটিং ক্রিম লাগান নিয়মিত। দিনের বেলা ঘুম থেকে ওঠার পর ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই দুইবার প্রতিদিন নিয়মিত লাগান। দেখবেন চোখের নিচের কালচেভাব অনেকটা কমে এসেছে।

স্ক্র্যাবিং ও ফেসওয়াশ

ত্বকের যত্ন নিতে স্ক্র্যাবিং রুটিনের একটি অপরিহার্য অংশ। এজন্য ফেসওয়াশ বা স্ক্র্যাবার দিয়ে প্রতিদিন আপনার ত্বক পরিষ্কার করুন। এটি ত্বকের ছিদ্র খুলতে সাহায্য করে এবং ত্বকের ময়লা দূর করে। এটি ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস দূর করতেও সাহায্য করে। মুখ পরিস্কার করতে সাধারণ সাবানের পরিবর্তে ফেসওয়াশ ব্যবহার করা উচিত। কারণ, সাধারণ সাবানে অনেক বেশি রুক্ষ উপাদান থাকে; যা মুখের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। যাঁরা বাইরে অনেক বেশি সময় থাকেন এবং ওয়র্কআউট করেন, তাঁদের মুখ ধোওয়ার জন্য ফেসওয়াশ ব্যবহারের পর অল্প গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিতে হবে এবং সপ্তাহে অন্তত দুদিন স্ক্র্যাব করানো উচিত। এতে ব্রণের সমস্যারও সমাধান হবে।

ত্বকের যত্ন নিতে সম্ভব হলে ঘণ্টায় একবার মুখে পানির ঝাপটা দিন। ব্ল্যাকহেডস উঠাতে স্ক্র্যাব ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া খাবারদাবারে সচেতন হলে ব্রণ কম হয়। তাই ভাজাপোড়া বেশি খাবেন না। অ্যালকোহল ও সিগারেটের অভ্যাস থাকলে পরিত্যাগ করা উচিৎ।

অন্যদিকে যারা চশমা পরেন তাদের নাকের একটা অংশ পর্যন্ত ব্ল্যাকহেডস হয়। কালো ছোপ ছোপ দাগ এড়িযে যেতে চাইলে সপ্তাহ অন্তত একদিন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে স্ক্র্যাব তৈরি করে ব্যবহার করলে মুখের ব্ল্যাকহেডস বা কালো দাগ সেরে যাবে। ত্বকে ব্ল্যাকহেডস থাকলে গরম পানিতে কিছু সময় ভাপ নিয়ে আস্তে আস্তে দুই আঙুলের ডগা দিয়ে চেপে ব্ল্যাকহেডস বের করতে পারেন।

সময়ের সাথে সাথে বদলে গেছে অনেক কিছু। তাই পাল্টাতে হবে নিজেকেও। নিজেকে একটু সুন্দরভাবে উপস্থাপন করাটা যেন এখন সময়ের দাবী হয়ে দেখা দিয়েছে। নিজের ত্বকের যত্ন নিয়ে আপনি ও থাকুন সবসময় প্রাণবন্ত। তাই ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও ত্বকের প্রতি একটু যত্নবান হতেই হবে। আপনার ত্বকই আপনার আত্মবিশ্বাস ধরে রাখবে। আপনার আত্মবিশ্বাসী চেহারা আর স্মার্ট এপ্রোচে আশেপাশের মানুষ আপনার উপর বিশ্বাস রাখবে, আপনাকে মানতে চেষ্টা করবে।

বিয়ে সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য, সেবা, এবং পরামর্শ পেতে যোগাযোগ করুন তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়ার সাথে।
কল করুনঃ+880-1407-004393 অথবা +88-01782-006615 এ।
আমাদের মেইল করুন taslima55bd@gmail.com

5 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here