বিয়েতে কোন শাড়ি পরবো? কিভাবে বিয়ের শাড়ি কিনবো- নিয়ে এই কন্টেন্টটি সম্পূর্ণ তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়ার নিজস্ব। তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়ার পূর্ববর্তী অনেকগুলো ব্লগ হুবহু কপি করে অনেক ম্যাট্রিমনি সাইটে পাবলিশ করা হয়েছে, এ ব্যাপারটি আমাদের নজরে এসেছে। উক্ত ম্যাট্রিমনি সাইটের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ব্লগের সম্পূর্ণ বা আংশিক অংশ কপি করে অন্য কোনো সাইট বিশেষ করে যেকোনো ম্যাট্রিমনি ব্লগে পাবলিশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাঙালি নারী শাড়িতেই অনন্যা। সেটা হোক বিয়েতে, ঈদ, পূজা, পার্বণ অথবা কোনো জন্মদিন বা পার্টিতে। বিশেষ দিনগুলো শাড়ি ছাড়া একদমই চলে না। আর এসব বিশেষ দিনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বিয়ে। বিয়ের অনুষ্ঠানে সবাইকে ছাপিয়ে মধ্যমণি হয়ে ওঠে বিয়ের কনে। বিয়েতে সবাই দেখতে চায় শাড়ি এবং সাজগোজে নতুন বউকে কেমন লাগছে। তাই শাড়িটি হওয়া চাই নজরকাড়া, নান্দনিক আর ঐতিহ্যবাহী। ভালো শাড়ি কিনতে না পারলে, সারাজীবন সেই নিয়ে আক্ষেপ করতে হবে। বিয়েতে কোন শাড়ি পরবেন আর কিভাবে বিয়ের শাড়ি কিনবেন সেটা জানতে পড়ুন আজকের আর্টিকেলটি।
বিয়েতে কোন শাড়ি পরবো?
এখনকার বিয়েতে এনগেজমেন্ট, গায়ে হলুদ, বিয়ে ও বৌভাত মিলিয়ে বেশ কয়েকটি আলাদা অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এই অনুষ্ঠানগুলোর জন্য আলাদা শাড়ি দরকার।
এনগেজমেন্টের দিন আপনার নিজের পছন্দ ও পার্সোনালিটি অনুযায়ী শাড়ি পরতে পারেন। টাঙ্গাইল হাফ সিল্ক বা সফট সিল্ক সবচেয়ে মানানসই। তাছাড়া জামদানি তো আছেই। জামদানি বা সুতি শাড়িতে নিজের পছন্দ মতো পাড় লাগিয়ে নিতে পারেন। তাহলে আরো গর্জিয়াস দেখাবে। এছাড়া এনগেজমেন্টের জন্য মসলিন, শিফনে শাড়িও পরতে পারেন। হালকা রঙ যেমন গোলাপি, মেজেন্টা, মেরুন কিংবা লাল, খয়েরি রঙের শাড়ি পরলে ছবিতেও আপনাকে সুন্দর লাগবে।
আদর্শ জীবনসঙ্গী খুঁজতে
এরপরই আসে গায়ে হলুদ। গায়ে হলুদে চিরায়ত লাল পাড়ের হলুদ শাড়ির পাশাপাশি কমলা, গাঢ় সবুজ, কাচাঁ মেহেদি, হালকা বেগুনি রঙের শাড়ি পরতে পারেন। অথবা বেছে নিতে পারেন একরঙা কাতান শাড়ি। গায়ে হলুদে কোন শাড়ি পরবেন সেটার আরও বিস্তারিত জানতে আমাদের আগের আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
এবার বলি বিয়ের শাড়ি নিয়ে। বিয়েতে অন্তত ৮০% মেয়েরাই লাল রঙের শাড়ি পরে। আপনি যদি লাল শাড়ি পরতে না চান তাহলে মেরুন, জাম, গাঢ় নীল, বেগুনি বা গোলাপি কালারের শাড়ি পরতে পারেন। সবচেয়ে জমকালো শাড়িটি পরবেন বিয়ের দিনে। বেনারসি, জাবেদা, জর্জেট, সিল্ক, ভেলভেট, কাঞ্জিভরম, কাতান শাড়ি পরতে পারেন। এছাড়া সিকোয়েন্সের ভারি কাজ, অ্যামব্রয়ডারি, মুক্তা বা কুন্দনের কাজ করা শাড়ি বেছে নিতে পারেন।
বৌভাতের দিনে পরার জন্য বেছে নিতে পারেন ফ্যাশনেবল, হালকা কাজ ও হালকা রঙের শাড়ি। রঙ হতে পারে গোল্ডেন, পেয়াজ, সফট পিংক অথবা পিচ এমকি সাদা। বৌভাতে ভালো লাগবে সিফন, মসলিন আর হালকা কাজের জামদানি।
কিভাবে বিয়ের শাড়ি কিনবো?
বিয়ের শাড়ি কেনার সময় অনেকে ভুল করে থাকেন। এখনকার মেয়েরা বান্ধবীদের সাথে দোকানে গিয়ে নিজের বিয়ের শাড়িটি নিজেরাই কিনতে পছন্দ করে। আপনার বিয়ের শাড়ি যদি আপনি নিজেই কিনতে চান আর যদি শাড়ি কেনার অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে খুব সতর্কতার সঙ্গে কিনতে হবে।
কোন বিয়ের শাড়ি এখন ফ্যাশনেবল, কোন রঙের শাড়ি এখন ট্রেন্ডিং, কোন রঙটি পরলে আপনাকে উজ্জ্বল দেখাবে, কেমন শাড়িতে লম্বা দেখাবে আর কেমন শাড়িতে দেখাবে চিকন এসব কিছু মনে রাখতে হবে। আপনাকে মানাবে এমন গর্জিয়াস বিয়ের শাড়ি কেনার টিপস আমরা দিচ্ছি, যেগুলো মনে রাখলে আপনার বিয়ের শাড়িটি হবে একদম মানানসই।
আপনি স্বাস্থ্য যদি একটু ভালো তাহলে অবশ্যই জর্জেট শাড়ি কিনবেন। জর্জেট শাড়ি পরলে আপনার ওজন অনেকটাই কম দেখাবে। শাড়িতে খুব ভারী কাজ রাখবেন না। আবার খাটো মেয়েরাও জর্জেট শাড়ি বেছে নিতে পারেন। স্লিম দেখালে লম্বাও লাগবে বেশি।
আপনি যদি বেশি স্লিম হয়ে থাকেন, তাহলে কাতানসহ যেকোনো ভারী কাপড়ের শাড়ির কালেকশন দেখতে পারেন। স্লিম মেয়েদের সুবিধা হলো, শাড়িতে কারুকাজ যতো বেশি হবে তাদেরকে ততই সুন্দর দেখাবে।
আপনার হাইট বুঝে বিয়ের শাড়িটি কিনুন। আপনার হাইট যদি কম হয় তাহলে চওড়া পাড়ের শাড়ি পরবেন না, বরং যতটা সম্ভব চিকন পাড় পরুন। চিকন পাড়ের বিয়ের শাড়ি পরলে আপনাকে একটু লম্বা দেখাবে। আর যাদের স্বাস্থ্য ভালা তারাও চিকন পাড় পরতে পারেন। অন্যদিকে বেশি লম্বা ও স্লিম মেয়েরা মোটা পাড়ের বিয়ের শাড়িটি কিনুন। বিশ্বাস করুন, বিয়ের দিন আপনার চেয়ে বেশি সুন্দর আর কাউকে লাগবে না!
কোন রঙের বিয়ের শাড়ি কিনবো?
এবার আসি শাড়ির রঙের ক্ষেত্রে। শাড়ির দোকানে গেলে একই রঙের হরেক রকম শেড দেখতে পাবেন। চিরায়ত লাল রঙের শাড়ি ছাড়াও বেছে নিতে পারেন মেরুন, সোনালি, ব্রোঞ্জ, গাঢ় গোলাপির নানান শেড, মিষ্টি কালার, কমলা ইত্যাদি। ল্যাভেন্ডার রঙটাও বেশ মানাবে।
আপনার গায়ের রঙ যদি একটু ডার্ক হয় তাহলে সোনালি রঙের শাড়ি বা যেকোনো চকচকে রঙের শাড়ি এড়িয়ে চলুন। এক্ষেত্রে লালের কয়েকটি শেড দেখতে পারেন। শ্যামলা মেয়েদের লাল রঙের শাড়িতে খুবই সুন্দর মানায়। আর হালকা রঙ পরতে চাইলে মিষ্টি, উজ্জ্বল রঙ বেছে নিন।
শাড়ির দোকানে হাজার ওয়াটের অনেকগুলো আলো জ্বলে, যেদিকে তাকাবেন চোখ ধাঁধিয়ে যাবে। আর এই আলোতে শাড়ির অরিজিনাল রঙগুলোকে দেখায় সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাই শাড়ি কেনার কম আলোতে বা স্বাভাবিক আলোতে শাড়ির রঙটি একবার দেখে তারপর কিনুন।
বিয়ে শাড়ি বিস্তারিত বিবরণ
শাড়ির দোকানে গেলে দেখতে পাবেন হরেক রকম শাড়ির কালেকশন। বাহারি রঙ, জমকালো কারুকাজ আর অপার সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে বসা দোকানে বিয়ের শাড়িগুলো যে কারো ভালো লাগবে তাই স্বাভাবিক। আপনার বিয়ের কেনাকাটা আরেকটু সহজ করতে আমরা কয়েক ধরনের বিয়ের শাড়ি নিয়ে আলোচনা করছি-
বেনারসী
বিয়ের শাড়ি হিসেবে বেনারসী শাড়ির নাম থাকে টপলিস্টে। শাড়ির দোকানে যাবেন অথচ বেনারসী দেখবেন না, এ রীতিমত অসম্ভব ব্যাপার। বেনারসী শাড়ি হিসেবে সবথেকে বিখ্যাত। বিয়েতে বেনারসী শাড়ি পরলে আপনাকে দেখতে খুবই সুন্দর লাগবে। একটু হালকা বেনারসী পরতে চাইলে কাতান সিল্ক বেনারসী পরতে পারেন।
জামদানি
শাড়ি হিসেবে বেনারসী শাড়ির পর জামদানির নাম সবসময়েই থাকে। বিয়ের পোশাক হিসেবে জামদানির আবেদনটা একটু অন্যরকম, কারণ জামদানি আমাদের দেশী শাড়ি। জামদানি শাড়ির মধ্যে রয়েছে নানা রকম ধরণ। যেমন হাফ সিল্ক জামদানী এবং ফুল কটন জামদানী। জামদানি শাড়ি তৈরীতে খুবই মিহি সুতো ব্যবহার করা হয়। বিয়ের শাড়ি হিসেবে মেয়েরা হাফ সিল্ক জামদানিই প্রেফার করেন। কিনে থাকেন। রঙের ক্ষেত্রে লাল, নীল, হলুদ, সবুজ, মেরুন, গোলাপি, সাদা ইত্যাদি বেশি প্রাধান্য পায় মেয়েদের কাছে।
জর্জেট শাড়ি
জর্জেট শাড়িও বেশ গর্জিয়াস। কিছুটা কম জমকালোই বলা চলে। জর্জেট কাপড় বেশ আরামদায়ক। এনগেজমেন্ট অথবা বৌ-ভাতে পড়ার জন্য অনেকে জর্জেট শাড়ি বেছে নিয়ে থাকেন।
তসর সিল্ক
বিয়েতে ভারী সিল্কের পাশাপাশি অনেকে হালকা সিল্কের শাড়িও পরতে পছন্দ করেন। বিয়ের শাগি হিসেবে তসর সিল্কও পরতে পারেন। এছাড়া স্টাইলিশ লুকে নজর কাড়তে ট্রাই করতে পারেন পিওর সিল্ক মটকা শাড়িও।
কাতান শাড়ি
কাতানের শাড়ি অনেক রকম হয়ে থাকে। যেমন, নেট কাতান, সাউথ কাতান, অপেরা কাতান, স্বর্ণ কাতান, সিল্ক কাতান, ইন্ডিয়ান কাতান, বেনারসী কাতানসহ অনেক ধরনের প্রকারভেদ রয়েছে। সস্তা থেকে দামি, সবরকম কাতানই পাবেন নিজের বাজেট অনুযায়ী।
বিয়ের শাড়ি কোথায় পাবো?
বিয়ের শাড়ি কিনতে চলে যান মিরপুর ১০ এর বেনারসি পল্লীতে। সেখানে দেশি-বিদেশি নানারকমের ও বাজেটের শাড়ি পাবেন। এছাড়া নিউমার্কেট, গুলশান, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি, মৌচাকসহ আপনার আশপাশের শাড়ির দোকানে আপনি আপনার পছন্দের শাড়ি পেয়ে যাবেন। বাজেট একটু কম হলে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে যেতে পারেন। সেখানে পাবেন কম দামে ভালো মানের শাড়ি। দোকানের কোনো শাড়ি পছন্দ না হলে বা পছন্দের ডিজাইনের বিয়ের শাড়ি অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন। শাড়ি কেনার সময় দরদাম করে কিনতে ভুলবেন না কিন্তু।
অভিজাত ওড়না
কনের বিয়ের পোশাক যা-ই হোক, বিয়েতে ওড়না থাকতেই হবে। ওড়নায় নকশি কাঁথার বা রঙতুলির সেলাই কনের অভিজাত রুচিকেই তুলে ধরে। মসলিন, টিস্যু, অরগান্ডা সিল্ক, পিওর সিল্কের ওড়না এখন বেশি প্রচলিত। আর অবশ্যই শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং করে ওড়না কিনবেন। মেরুন, ফিরোজা, সোনালি, নীল, অফহোয়াইট, ক্রিম, সবুজ, ম্যাজেন্টা, গোলাপিসহ পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সব রঙই পাবেন।
বিয়ের শাড়ি সাথে ম্যাচিং ব্লাউজ
শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং ব্লাউজ কিন্তু মাস্ট। বিয়ের শাড়ির সাথে আজকাল অনেকেই কনট্রাস্টিং রঙের ব্লাউজ পরছেন। ব্রোকেডের গোল্ডেন, সিলভার ব্লাউজের পাশাপাশি লাল, সাদা, কালো, অফ হোয়াইট রঙের ব্লাউজ বানিয়ে রাখুন। দেশি বিয়ের শাড়ির সঙ্গে ভালো লাগবে হ্যান্ডলুম সিল্ক, কাতানের ওপর কুন্দন, চুমকির নকশা, ভেলভেটের বোট নেক, জেট নেক, গোল গলার কোমর পর্যন্ত লম্বা ব্লাউজ। ছোট হাতার পাশাপাশি কনেসাজেও এখন ফুলহাতা কিংবা থ্রি কোয়ার্টার হাতার ব্লাউজ চলছে। সঙ্গে জর্জেট কিংবা জামদানির ওড়না গর্জিয়াস লুক আনবে।
বিয়ের শাড়ি কিনতে শেষ কথা
বিয়ের শাড়ি কেনার সময় তাড়াহুড়া করবেন না। বিয়ের আগে যথেষ্ট সময় হাতে রাখুন কেনাকটা করার জন্য। ভালো হয় শাড়ি কেনার সময় যদি অভিজ্ঞ কাউকে সাথে রাখেন। শাড়ি কেনার সময় সেটা কম্ফোর্টেবল কিনা দেখে নিন। বিয়ের শাড়ি কেনার আগে অবশ্যই ঠিক করে নিন কোন ধরনের শাড়ি কিনবেন। কোন শাড়ি পরলে ভালো মানাবে সেই বিষয়ে আগে থেকেই চিন্তাভাবনা করে নিন। আর যদি অনলাইনে শাড়ি কেনন, তাহলে অবশ্যই আগে ভালো করে যাচাই করে নিন। আর যদি দোকান থেকে কেনেন তাহলে অবশ্যই ট্রায়াল দেবেন।
কল করুনঃ+880-1407-004393 অথবা +88-01782-006615 এ।
আমাদের মেইল করুন taslima55bd@gmail.com